
সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের তৈরি মরণঘাতী ইয়াবার বিস্তার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শহরের অভিজাত আবাসিক এলাকা থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়,বানিজ্যিক এলাকা সহ পাড়া মহল্লায় হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিনই এদেশে ঢুকছে ইয়াবার চালান। প্রায় সময় ইয়াবা আটকের ঘটনা ঘটলেও ইয়াবার চালান আসা বন্ধ হয়নি বরং প্রায় প্রতিদিনই এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সদস্য। উখিয়া উপজেলার আনাচে-কানাচে ইয়াবা পাচারে নিয়োজিত হয়ে পড়েছে নারী পুরুষ,যুবক,যুবতী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও। সিন্ডিকেটের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে এসব পাচারকারীরা কম সময়ে কোটিপতি হওয়ার নেশায় পড়েছে। ফলে উখিয়ায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে ইয়াবা বানিজ্য। শুধুমাত্র উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ টি ইয়াবা সিন্ডিকেট তৎপর রয়েছে মানণঘাতী এ ইয়াবা ব্যবসায়। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজের মাধ্যমে এসব সিন্ডিকেট বেপরোয়া ভাবে প্রসাশনের নাকের নগার উপর দিয়ে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে সোর্সের দেওয়া তথ্যের ভিক্তিতে গুটিকয়েক ইয়াবা উদ্ধারের ঘটলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। শুধুমাত্র ইয়াবা বাহককে আটকের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন তাদের দ্বায়িত্ব শেষ করায় এর সাথে জড়িত গড়ফাদার বা সিন্ডিকেটের ব্যাপারে কোন তথ্য উদ্ধার করা যাচ্ছেনা বলে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ।
অনুসন্ধানে জানা যায়,উখিয়া সীমান্তের বালুখালী, শিয়াল্লাপাড়া,বেতবুনিয়া, দরগাবিল, ডেইলপাড়া ডিগিলিয়া,বরইতলী, রহমতের বিল,ধামনখালী সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন ইয়াবার চালান এসে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত নির্ধারিত স্থানে জমা হয়। পরবর্তিতে সিন্ডিকেট সদস্যরা এসব ইয়াবা সড়ক পথে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বড় বড় পাইকারী ব্যবসায়ীদের হাতে পৌঁছে দেয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের আর্ন্তজাতিক চোরাচালান সিন্ডিকেট এখন অস্ত্র ব্যবসার পরিবর্তে ইয়াবা ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এ সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের নিয়ন্ত্রনে গড়ে উঠেছে উখিয়ার প্রায় ১৫ টি সিন্ডিকেট। চিন্তিত ইয়াবা গডফাদারদের নিয়ে গড়া এসব সিন্ডিকেট সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে অনেকেই এখন নব্য কোটিপতি। সিন্ডিকেটের তরুন সদস্যদের অধিকাংশই আবার দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ও ব্যবসায়ীদের আশির্বাদপুষ্ট হয়ে এ ব্যবসায় এসেছে। এসব তরুনদের অনুসরণ করে প্রায় প্রতিদিনই সিন্ডিকেটের বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মুখ। এসব চিন্থিত সিন্ডিকেটের মাঝে যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে রয়েছে বখতিয়ার,জাহাঙ্গীর,এনামুল হক ও জয়নালের জাহার নেতৃত্ব বালুখালী সিন্ডিকেট, সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে ঘুমধুম সিন্ডিকেট, ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে জলপাইতলী সিন্ডিকেট, নুরুল আলম পুতিয়া, আবদুর রহমান ও আবদুর রহিমের নেতৃত্বে বালুখালী ঘোনারপাড়া সিন্ডিকেট, বাবুল,উত্তম ও ইসলামের নেতৃত্বে ঘিলাতলী সিন্ডিকেট, রাশেল,কানা মইন্নার নেতৃত্বে পালংখালী সিন্ডিকেট,কলিম উল্লাহ,কুতুপালংয়ে, সুশিল মিস্ত্রি সিন্ডিকেট, জানে আলম সিন্ডিকেড, রহমত উল্লাহ(কালু) সিন্ডিকেড, সোহেল ও দাড়ি জামালের নেতৃত্বে থাইনখালী সিন্ডিকেট, আতা উল্লা ও জালালের নেতৃত্বে সদর সিন্ডিকেট, দেলোয়ারের নেতৃত্বে হিজলিয়া সিন্ডিকেট, আলী আহামদ, জাহাঙ্গীর আলম ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে ভালুকিয়া সিন্ডিকেট, আকতারের নেতৃত্বে সিকদার বিল সিন্ডিকেট, আবদুল্লা,হারুন, রহমান ও লালুর নেতৃত্বে ডিগিলিয়া সিন্ডিকেট অন্যতম। এর বাইরেও সোনারপাড়া, থাইংখালী, জাদিমুরা, হলদিয়া পাতাবাড়ি,কুতুপালং সহ বিভিন্ন জায়গায় এলাকা ভিক্তিক সিন্ডিকেট করে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে চিন্থিত পাচারকারীচত্রু। এ ব্যাপারে উখিয়া টেকনাফের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছাইলাউ মারমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,ইয়াবার বিরুদ্ধে প্রসাশন হার্ডলাইনে রয়েছে। প্রতিনিয়তই ইয়াবা নিয়ে আটকের ঘটনা ঘটছে। সুনিদ্ধিষ্ট তথ্য ছাড়া ইয়াবা আটক করা কঠিন। এতে নিরপরাধ জনগনের হনরানির আশংকা। তবুও পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পাঠকের মতামত